বাউফল প্রতিনিধি ॥ পটুয়াখালীর বাউফলে যুবলীগ নেতা রুমন তালুকদার ও তার চাচাতো ভাই যুবলীগ কর্মী ইশাত খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলুকে সাময়িক ভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক সাংগঠনিক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অপর দিকে খুন হওয়ার আগে যুবলীগ নেতা রুমন তালুকদারের ফেসবুকে দেয়া একটি স্ট্যাটাস নিয়ে তোলপাড় চলছে।
খুন হওয়ার ২৪ দিন আগে গত ১৩ জুলাই ওই স্ট্যাটাসে রুমন তালুকদার খুন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে লিখেন, কাল রাত ১০টায় চেয়ারম্যান বাড়ির দরজায় চটপটি খেতে গিয়েছিলাম । সে এসে আমাকে বললো তুই আমাকে অনেক জ্বালাইছ, তোরে খুন করমু। ফাস্ট কেউ আমার সামনে এমন কথা বলেছে আর আমি কিছুই বলিনাই ’ এর ৩ মাস ৭দিন আগে যুবলীগ নেতা রুমন অপর এক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন,‘যদি আমার কোন দুর্ঘটনা বা অপমৃত্যু হয় তাহলে কেশবপুরের লাভলু চেয়ারম্যান ও অভি দায়ি থাকবেন। তাই আমি প্রশাসনের কাছে ও আমার মহান নেতার কাছে এ বিচার দাবি করছি।’ অভি সূর্যমনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চুর ছেলে।
গত রবিবার সন্ধ্যায় কেশবপুর বাজারে চা পান করতে গিয়ে ওই ইউপির যুবলীগ সহ-সভাপতি রুমন তালুকদার ও তার চাচাতো ভাই ইসাত প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় তার বড় ভাই মোঃ মফিজ উদ্দিন মিন্টু ৪ আগস্ট চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলুকে প্রধান আসামী করে ৫৯ জনের বিরুদ্ধে বাউফল থানায় মামলা দায়ের করেন। কিন্তু ওই মামলায় রহস্যজনক কারণে অভিকে আসামী করা হয়নি। এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভ বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন,‘ যেখানে কর্তা ইচ্ছে কির্তন হয়। সেখানে মুখ খুলতে গেলে আমাকেও রোষানলে পরতে হবে। বুঝে নেন, কোন নেতার কারণে অভিকে আসামী করা হয়নি? রুমন যাকে মহান নেতা মনে করে বিচার দাবি করেছেন, তিনিই অবিচার করলেন।’ এ ব্যাপারে নিহত যুবলীগ নেতা রুমনের বড় বোন অনি বলেন, ‘অভি আসামী না হওয়ায় আমি আমি ক্ষুদ্ধ হয়েছি। হতাশ হয়েছি। পরে খবর নিয়ে জানলাম, বিশেষ এক রাজনৈতিক নেতার হস্তক্ষেপের কারণে অভিকে আসামী করা হয়নি।’ তিনি ওই বিশেষ রাজনৈকি নেতার নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। অপর দিকে যুবলীগ নেতা রুম তালুকদার খুনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওই ইউপির চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলুকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা আওযামী লীগের এক সাংগঠনিক সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে সাময়িক বহিস্কার করা হয় এবং একটি ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই সাংগঠনিক সভায় স্থানীয় এমপি আসম ফিরোজ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply